ছবি: বাংলাবার্তা
মাতৃভাষা মহান আল্লাহর সেরা দান। মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য যে ধ্বনি ব্যবহার করে তা হলো ভাষা। মানুষ জন্মের পর থেকে মায়ের মুখের ভাষা শুনে যে ভাষা বলতে শিখে তাই মাতৃভাষা। মা ও মাতৃভাষার সম্পর্ক নিবিড়। মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় দুইজন ইসলামিক স্কলার।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশুদ্ধ ও মার্জিত ভাষায় কথা বলতেন। শুদ্ধ ও সুন্দর ভাষায় কথা বলা সুন্নাহ। সকল নবী-রাসুলকে মহান আল্লাহ স্বজাতির ভাষায় (মাতৃভাষায়) প্রেরণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য যারা আত্মত্যাগ করেছেন—সেই আবদুস সালাম, আবদুল জাব্বার, রফিক উদ্দীন আহমাদ, শফিউর রহমান ও আবুল বরকতকে মহান আল্লাহ আমাদের পক্ষ হতে উত্তম বিনিময় দান করুন। তাঁদের অবদানের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন হবে তখনই, যদি সর্বত্র আমরা বাংলাভাষার চর্চা করি, বাংলাভাষায় কথা বলতে হীনম্মন্যতায় না ভুগি, বাংলাভাষার বিকৃত উচ্চারণ থেকে বিরত থাকি এবং বিদেশি ভাষা ব্যবহার থেকে বেঁচে থাকতে পারি।
আরও পড়ুন : মাতৃভাষা মহান আল্লাহর সেরা দান
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেমী বলেন, মৃতব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে নির্মিত বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করলে কোনো লাভ নেই। ইসলাম এ কাজকে অনুমোদন করে না। উপরন্তু এ কাজের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়। মৃতব্যক্তিদের জন্য নেক আমল করে দোয়া করলে তারা উপকৃত হয়।
তিনি আরও বলেন, ভাষা আন্দোলনের এত বছর পরও বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলা ভাষাকে গ্রহণ করা হয়নি। এলিট শ্রেণীদের কাছে বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষার কদর বেশি। তাদের বাচ্চারা বিদেশে পড়ে ঠিকমতো বাংলা বলতেও পারে না। বাংলাদেশের আদালতে এখনও বাংলায় রায় লেখা হয় না। ভাবা যায়?
কাসেমী বলেন, যারা মাকে ভালোবাসে না, ওরা বছরে একটা দিন নির্ধারণ করেছে মায়ের জন্য। ওইদিন মায়ের ভালোবাসার কথা বলে, বাকি সারা বছর কোনো খবর থাকে না। তদ্রূপ কিছু মানুষ দেখবেন ২১শে ফেব্রুয়ারি এলে বাংলা ভাষার কথা বলে; কিন্তু সারা বছর আর কোনো খবর থাকে না।
মাতৃভাষা মহান আল্লাহর সেরা দান। তাই মহান আল্লাহর নেয়ামতের যথাযথ ব্যবহার এবং তাঁদের অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সবাই সর্বত্র নিঃসংকোচে বাংলাভাষার চর্চা করি এবং ভাষার অপব্যবহার (খারাপ ভাষায় কথা বলা, গালমন্দ, মিথ্যা, প্রতারণা ইত্যাদি) থেকে বিরত থাকি। শুদ্ধভাবে বাংলা ভাষা বলা ও লেখার চর্চায় মনোযোগ দিই। এটাই একুশের চেতনা।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ