ছবি: বাংলাবার্তা
আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। এ রাতটি ‘লাইলাতুল বরাত’ হিসেবেও পরিচিত। শবে বরাত শব্দটি ফারসি। শব অর্থ রাত, বরাত অর্থ মুক্তি; শবে বরাত অর্থ মুক্তির রজনী।
পবিত্র এই রাতে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সারা বিশ্বের মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগিতে সময় কাটান। নফল নামাজ, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, জিকির ও ধর্মীয় আলোচনার মাধ্যমে অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং সামনের জীবনের কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
মহান আল্লাহ পবিত্র শবে বরাতের রাতে তাঁর সৃষ্টিজীবের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু সালাবা (রা.) থেকে বর্ণিত, যখন অর্ধ শাবানের রাত আসে, তখন মহান আল্লাহ সৃষ্টজীবের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান; মুমিনদের ক্ষমা করে দেন, কাফিরদের ফিরে আসার সুযোগ দেন এবং হিংসুকদের হিংসা পরিত্যাগ ছাড়া ক্ষমা করেন না। (কিতাবুস সুন্নাহ, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮২)।
আরও পড়ুন : শবে বরাতে যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন
আরেক হাদিসে হজরত মুআয ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ অর্ধ শাবানের রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৫৬৬৫)।
শবে বরাতে নফল আমলসমূহ সম্মিলিত নয়, ব্যক্তিগত
পবিত্র শবে বরাতের নফল আমলসমূহ, বিশুদ্ধ মতানুসারে একাকীভাবে করণীয়। ফরয নামায তো অবশ্যই মসজিদে আদায় করতে হবে। এরপর যতটুকু নফল পড়ার তা নিজ নিজ ঘরে একাকী পড়বে। এসব নফল আমলের জন্য দলে দলে মসজিদে এসে সমবেত হওয়ার কোনো প্রমাণ হাদীস শরীফেও নেই আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এর রেওয়াজ ছিল না। (ইক্তিযাউস সিরাতিল মুসতাকীম ২/৬৩১-৬৪১; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ২১৯)
তবে কোনো আহবান ছাড়া এমনিই কিছু লোক যদি মসজিদে এসে যায়, তাহলে প্রত্যেকে নিজ নিজ আমলে মশগুল থাকবে, একে অন্যের আমলের ব্যাঘাত সৃষ্টির কারণ হবে না।
কোনো কোনো জায়গায় এই রেওয়াজ আছে যে, এ রাতে মাগরিব বা এশার পর থেকেই ওয়াজ-নসীহত আরম্ভ হয়। আবার কোথাও ওয়াজের পর মিলাদ-মাহফিলের অনুষ্ঠান হয়। কোথাও তো সারা রাত খতমে-শবীনা হতে থাকে। উপরন্তু এ সবকিছুই করা হয় মাইকে এবং বাইরের মাইকও ছেড়ে দেওয়া হয়।
মনে রাখতে হবে, এ সবকিছুই ভুল রেওয়াজ। এ রাতে মাইক ছেড়ে দিয়ে বক্তৃতা-ওয়াজের আয়োজন করা ঠিক নয়। এতে না ইবাদতে আগ্রহী মানুষের পক্ষে ঘরে বসে একাগ্রতার সাথে ইবাদত করা সম্ভব হয়, আর না মসজিদে। অসুস্থ ব্যক্তিদের বিশ্রামেও মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। আল্লাহ আমাদের এসব ভুল কাজকর্ম পরিহার করার তাওফীক দিন।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র বরাতের বর্জনীয় আমলগুলো বর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ