ছবি: বাংলাবার্তা
পবিত্র রমজান মুমিনের ইবাদতের বসন্তকাল। মুমিনের গুনাহ মাফের অনন্য সুযোগ। প্রতিটি নফল আমলে একটি ফরজ আমলের সাওয়াব। আর একটি ফরজ আমলে সত্তরটি ফরজ আমলের সাওয়াব। তবে প্রতিটি আমল করতে হবে ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী। তাহলেই মিলবে এ সাওয়াব।
ইফতার
১. সূর্যাস্তের পর পর দেরি না করে ইফতার করা মুস্তাহাব। হাদিস শরীফে আছে :
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ
রাসুল সা. ইরশাদ করেন : যতদিন মানুষ দেরি না করে সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে। তবে ইফতারের সময় হওয়ার পর সতর্কতামূলক ৩/৪ মিনিট বিলম্ব করা উচিত। রাসুল সা. ও সাহাবায়ে কেরাম ঘড়ির কাটা দেখে ইফতার করতেন না।
২. মাগরিবের নামায পড়ার আগে ইফতার করে নিবে যেন সূর্যাস্তের পর তাড়াতাড়ি ইফতার করে নেয়ার সওয়াব পাওয়া যায়।
হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. বলেন রাসুল সা. নামায পড়ার আগে তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, তাজা খেজুর না পেলে শুকনো খেজুর দ্বারা তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন।
৩. খেজুর দ্বারা ইফতার করা মুস্তাহাব। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার শুরু করবে। আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত রাসূল স. বলেন যার কাছে খেজুর আছে সে খেজুর দ্বারা ইফতার করবে। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কেননা পানি হল পবিত্র।
৪. ইফতারের আগমুহূর্তে বেশি বেশি দোয়া ইস্তেগফার করা উচিত হাদিস শরীফে এসেছে ইফতারের সময় রোযাদারের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।
সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. ইফতারের সময় এ দোয়া পড়তেন :
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَنْ تَغْفِرَ لِي
‘হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে আপনার ওই রহমতের উসিলায় প্রার্থনা করছি যা সকল কিছু পরিব্যাপ্ত আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
আরও পড়ুন : জুতার ওপর দাঁড়িয়ে জানাযার নামাজ পড়া যাবে?
সাহরি
সাহরি খাওয়া সুন্নত। পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয় এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরির সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। হাদিস শরীফে আছে :
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَسَحَّرُوا، فَإِنَّ فِي السُّحُورِ بَرَكَةً.
রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, তোমরা সাহরি খাও; কেন না সাহরিতে বরকত রয়েছে।
অন্য হাদিসে বলা হয়েছে তোমরা সাহরি খাও, যদিও এক ঢোক পানি হয়। কারণ যারা সাহরি খায় আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।
সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময় সাহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এত দেরি করা মাকরুহ যে, সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত রাসূল সা. ইরশাদ করেন, সকল নবীকে সময় হয়ে গেলে দেরি না করে তাড়াতাড়ি ইফতার করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং সাহরি সময়ের শেষ দিকে খেতে বলা হয়েছে।
আমর ইবনে মাইমুন আলআওদী বলেন, সাহাবায়ে কেরাম সময় হয়ে যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি ইফতারি করে নিতেন এবং সেহরী খেতেন সময়ের শেষ দিকে ।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ