
সংগৃহীত
জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম, যা সম্পদশালীদের জন্য বাধ্যতামূলক ইবাদত। এটি সারা বছরই দেওয়া যায়, তবে বিশেষভাবে রমজান মাসে জাকাত আদায় করার রয়েছে বাড়তি ফজিলত ও তাৎপর্য।
রমজান: নেকি অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময়
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, রমজান হলো বরকতের মাস। এ মাসে প্রতিটি সৎকর্মের সওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। রাসূল (সা.) আরও বলেন, “রমজানে একটি ফরজ ইবাদতের সওয়াব ৭০টি ফরজ ইবাদতের সমান, আর একটি নফল ইবাদতের সওয়াব ফরজের সমান।”
জাকাত আদায়ের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। সারা বছর যেকোনো সময় জাকাত দেওয়া গেলেও, রমজানে তা আদায় করলে ৭০ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
হাদিসের আলোকে রমজানে জাকাতের গুরুত্ব
হজরত উসমান (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“হে মানুষ! রমজান মাস হলো জাকাত আদায়ের মাস। তোমাদের সম্পদ হিসাব করে নেসাব পরিমাণ হলে এ মাসেই জাকাত আদায় করো।”
অন্য একটি হাদিসে এসেছে, রমজানে দান-সদকার প্রতি রাসূল (সা.)-এর বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি এ মাসে প্রচুর দান করতেন এবং সাহাবাদেরও বেশি বেশি সদকা ও জাকাত দেওয়ার উপদেশ দিতেন।
কেন রমজানে জাকাত দেওয়া উচিত?
১. সওয়াব বৃদ্ধির সুযোগ – রমজানে প্রতিটি নেক কাজের সওয়াব ৭০ গুণ বৃদ্ধি পায়, যা অন্য মাসে সম্ভব নয়।
2. গরিবদের সহায়তা – রমজানে অসহায় ও দুস্থদের সাহায্য করলে তারা সহজেই ইবাদত ও রোজা পালনে মনোনিবেশ করতে পারে।
3. নৈতিক ও আত্মিক পরিশুদ্ধি – জাকাত সম্পদের পরিশুদ্ধি ও আত্মিক প্রশান্তি অর্জনের মাধ্যম।
4. ঋণ পরিশোধের তাগিদ – রাসূল (সা.) বলেছেন, “যদি কেউ ঋণগ্রস্ত হয়, তবে সে যেন প্রথমে ঋণ পরিশোধ করে, তারপর জাকাত আদায় করে।”
রমজানে জাকাত আদায় না করলে কী হবে?
কিছু মানুষ রোজা রাখেন, তারাবি পড়েন, অন্যান্য ইবাদতে অংশ নেন, কিন্তু ফরজ জাকাত আদায়ে গাফিলতি করেন। অথচ কোরআনে আল্লাহ তায়ালা জাকাত আদায় না করার কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। তাই রমজান মাসকে জাকাত আদায়ের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।
শেষ কথা
রমজান যেমন রোজার মাস, তেমনই এটি দান-খয়রাত ও জাকাত প্রদানের মাসও। তাই যারা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, তাদের জন্য এ মাসেই জাকাত আদায় করা অধিক ফজিলতপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক নিয়মে জাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ