
ফাইল ছবি
ইসলাম মানবতার মুক্তির একমাত্র শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। মানুষের জীবনের সকল বিষয়ের সমাধান রয়েছে ইসলামে। কারও উপর ইসলামের বিধান চাপিয়ে দেয়া হয় না। বরং সুবিধা-অসুবিধার বিবেচনা করা হয়।
এখানে তুলে ধরছি যে ৫ ধরনের ব্যক্তির জন্য রমজানের রোজা না রেখে পরে রোজা রাখার ছাড় দেয়া হয়েছে।
মুসাফির
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন,
وَ مَنۡ كَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰهُ بِكُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِكُمُ الۡعُسۡرَ ۫
‘আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য কঠিন চান না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
মুসাফির সফর থেকে যখন মুকীম হবে, রোজাগুলোর কাজা রাখবে। তবে যদি মুসাফির সফর অবস্থায় কষ্ট না হয় তবে রোজা রাখাই উত্তম। মুসাফির ব্যক্তি সম্পর্কে আনাস রা.কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যে রোজা রাখবে না, সে অবকাশ গ্রহণ করল আর যে রোজা রাখল, সে উত্তম কাজ করল। (রুদ্দুল মুহতার ২/৪২১)
অসুস্থ ব্যক্তি
রোজা রাখার কারণে কোনো জটিল রোগ সৃষ্টি বা পুরাতন রোগ বৃদ্ধির প্রবল ধারণা হলে, তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি আছে। সুস্থ হওয়ার পর কাজা করে নেবেন। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪)
তবে মনে রাখতে হবে, রোগ সৃষ্টি বা পুরাতন রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা যদি দৃঢ় হয়-- তাহলে তো কথা নেই। নতুবা একজন অভিজ্ঞ ও দ্বীনদার চিকিৎসকের মতামতের ভিত্তিতে রোজা না রাখার সুযোগ রয়েছে। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৩/৩৫৯; আদ দুররুল মুখতার : ২/৪২২)
দুর্বল ব্যক্তি
বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত সাবেত বুনানি (রহ.) বলেন,
হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) যখন বার্ধক্যের কারণে রোজা রাখতে সক্ষম ছিলেন না; তখন তিনি রোজা না রেখে (ফিদিয়া) খাবার দান করতেন। (মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৫৭০)
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা
রোজা রাখার কারণে গর্ভবতীর নিজের কিংবা সন্তানের প্রাণহানি বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হলে তার জন্য রোজা না রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে পরে এ রোজাগুলো কাজা আদায় করে নিবে। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৩/৩৫৯)
হাদিসে আছে, মহান আল্লাহ মুসাফিরের জন্য রোজার বিধান শিথিল করেছেন এবং নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন। আর গর্ভবতী ও স্তন্যদানকাীর জন্যও রোজার বিধান শিথিল করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ৭১৫)
হায়েজ ও নেফাসের সময়
হায়েজ অর্থাৎ মাসিক ঋতুস্রাবের সময় এবং নেফাস তথা সন্তান জন্মদানের পরবর্তী ৪০ দিন নারীদের জন্য ওয়াজিব হলো রোজা না রাখা। এ অবস্থায় নামাজ ও রোজা কোনোটাই আদায় করা জায়েজ নেই। (বোখারি ও মুসলিম)
পরবর্তীতে রোজা কাজা আদায় করবে। আর নামাজের কাজা আদায় করতে হবে না।
এসব ব্যক্তি রোজার সময় যেভাবে কাটাবেন
এক. অসুস্থতা, বার্ধক্য ইত্যাদি শরিয়তসম্মত কোনো সমস্যার কারণে কেউ রমজানের রোজা রাখতে সক্ষম না হলে— সে পানাহার করতে পারবে। তবে রোজাদারদের অগোচরে পানাহার করা উচিত।
দুই. মুসাফির যদি দিনের বেলা সফর থেকে বাড়ি ফিরে আসে তাহলে অবশিষ্ট দিন পানাহার থেকে বিরত থাকবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ৬/২২১)
তিন. তদ্রূপ দিনের বেলা কোনো নারীর ঋতুচক্র বন্ধ হলে অবশিষ্ট দিন পানাহার থেকে বিরত থাকবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ৬/২২০; মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক : ৪/১৭০)
বাংলাবার্তা/এমএইচ