
ফাইল ছবি
ইসলামে নামাজের পরই জাকাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু দান নয়, বরং ধনী-গরিবের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। পবিত্র কুরআনে নামাজের পাশাপাশি জাকাত আদায়ের বিষয়ে বহুবার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাকাত আদায়ের নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও রমজান মাসকে উত্তম সময় হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ এই মাসে দান-সদকার সওয়াব ৭০ গুণ বৃদ্ধি পায়। জমি-জমা ও সম্পত্তির ওপর জাকাত কীভাবে হিসাব করবেন, সে বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো—
✅ বসবাসের জন্য ব্যবহৃত সম্পত্তি
যে জমি, ঘর বা প্লট ব্যক্তি নিজে ব্যবহার করেন, তার ওপর জাকাত ফরজ নয়। কারণ, এগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় সম্পদের অন্তর্ভুক্ত।
✅ ভাড়ার আয় থেকে জাকাত
যেসব বাড়ি, দোকান বা গুদাম ভাড়া দেওয়া হয়, সেগুলোর মূল্যের ওপর সরাসরি জাকাত ফরজ নয়। তবে ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে নেসাব পরিমাণ হলে, বৎসর শেষে তার ওপর জাকাত দিতে হবে।
✅ ব্যবসার জন্য কেনা সম্পত্তি
যেসব জমি, বাড়ি বা প্লট ব্যবসার উদ্দেশ্যে কেনা হয়েছে, সেগুলোর মূল্যের ওপর জাকাত ফরজ। বিক্রি হোক বা না হোক, বছরের শেষে এগুলোর বাজারমূল্যের ভিত্তিতে হিসাব করে ২.৫% হারে জাকাত দিতে হবে।
✅ শিল্প-কারখানার সম্পত্তি
কারখানা, মিল-ফ্যাক্টরির জমি, ভবন বা স্থায়ী সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ নয়। তবে উৎপাদিত পণ্য, কাঁচামাল ও লভ্যাংশের ওপর জাকাত আদায় করতে হবে।
✅ ব্যবসায়িক যানবাহন
যেসব যানবাহন ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর মূল্যের ওপর জাকাত ফরজ নয়। তবে অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে কুরবানি, সদকায়ে ফিতর ও হজের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
✅ ঋণগ্রস্ত ব্যবসার ক্ষেত্রে জাকাত
যদি কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ঋণে জর্জরিত থাকে, তাহলে ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পদ নেসাব পরিমাণ হলে তার ওপর জাকাত ফরজ হবে।
জাকাত আদায় শুধু ইসলামী বিধান নয়, বরং এটি সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য সহায়ক ব্যবস্থা। সঠিকভাবে হিসাব করে নিয়মিত জাকাত প্রদান করলে সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ