
ফাইল ছবি
জাকাত ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। অন্যান্য ইবাদতের মতো জাকাত আদায়ের ক্ষেত্রেও সঠিক নিয়ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামী বিধান অনুসারে, জাকাত দেওয়ার সময় নিয়ত করাই উত্তম। তবে কেউ যদি জাকাতের জন্য নির্ধারিত অর্থ অন্যান্য টাকা থেকে আলাদা করার সময়ই নিয়ত করে নেন এবং পরে তা গরিবদের মধ্যে বিতরণ করেন, তবে তাতেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে।
যাদের ওপর জাকাত ফরজ
জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য একজন মুসলিমকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হয়। শরিয়ত মতে, জাকাতের নেসাব নির্ধারিত রয়েছে -
-
সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ,
-
সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা,
-
বা উক্ত সম্পদের সমমূল্যের নগদ অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থ কিংবা ব্যবসার পণ্য।
যদি কোনো ব্যক্তি স্বাধীন, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও বুদ্ধিসম্পন্ন হন এবং তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর স্থায়ী থাকে, তাহলে তার জন্য জাকাত প্রদান করা ফরজ।
জাকাত প্রদানের যোগ্য ব্যক্তি
পবিত্র কুরআনের সূরা তাওবার ৬০ নম্বর আয়াত অনুযায়ী, জাকাত গ্রহণের জন্য আট শ্রেণির লোককে উপযুক্ত বিবেচনা করা হয়েছে। তারা হলেন:
-
ফকির - যাদের নিকট নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, তবে তারা কর্মক্ষম হতে পারেন।
-
মিসকিন - যারা চরম দারিদ্র্যের শিকার এবং সম্পদহীন।
-
আমিল - রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত জাকাত সংগ্রহকারী।
-
নওমুসলিম - যারা ইসলামে নতুনভাবে দীক্ষিত হয়েছেন এবং পুনর্বাসনের জন্য সাহায্য প্রয়োজন।
-
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি - যাদের ঋণ পরিশোধের পর নেসাব পরিমাণ সম্পদ অবশিষ্ট থাকে না।
-
আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তি - যারা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন বা ইসলামের প্রচারে নিয়োজিত।
-
মুসাফির - যারা সফররত অবস্থায় সম্পদশূন্য হয়ে পড়েছেন এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য সহায়তা প্রয়োজন।
-
যুদ্ধরত মুসলিম - যারা ইসলামের সুরক্ষা বা উন্নয়নে সংগ্রামরত।
জাকাত প্রদান করতে হলে উপরোক্ত যে কোনো এক বা একাধিক শ্রেণির ব্যক্তিকে সহায়তা করা যায়। সঠিকভাবে জাকাত প্রদান করলে সম্পদের পবিত্রতা রক্ষা হয় এবং সামাজিক সাম্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
জাকাত কেবল একটি আর্থিক দায়বদ্ধতা নয়, বরং এটি সমাজের দরিদ্র শ্রেণির প্রতি দায়িত্ব পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। সঠিক
নিয়তের সঙ্গে জাকাত প্রদান করলে তা আত্মার পরিশুদ্ধি এবং সমাজের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ