ছবি: বাংলাবার্তা
ঢাকা: মো রাহাত মাহমুদ। মাত্র ৩ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেন তিনি। ঢাকা কাস্টম হাউসে সিএন্ডএফ হিসেবে তার কাজ শুরু। তখন সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতনে কর্মজীবন শুরু হলেও এখন তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনি অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেসার্স দি নিজামপুর এজেন্সি যার অংশীদার মালিক মো. আব্দুর রহমান এবং মো. রাহাত মাহমুদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুর কার্যালয় থেকে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনারকে একটি চিঠি দেন দুদকের উপ-সহকারি পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপু। তিনি এই অভিযোগটি অনুসন্ধান করছেন।
এদিকে আরও জানা গিয়েছে, সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী রাহাত মাহমুদের সম্পদ বিবরণী যাচাই বাছাই করার জন্য তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধান করছে কমিশন। এছাড়া রাহাত মাহমুদ মেসার্স দি নিজামপুর এজেন্সি যার মালিক দুইজন। রাহাত ছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানের মালিক মো আব্দুর রহমান। তাদের বিভিন্ন সময়ে সম্পাদিত আমদানি ও রফতানি সংশ্লিষ্ট ক্লিয়ারিং এণ্ড ফরওয়ার্ডিং কার্যাবলী বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। সেজন্য মেসার্স দি নিজামপুর এজেন্সির ০১/০১/২০০০ সাল থেকে ৩০/০৯/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত সময়ে যেসকল আমদানিকারক ও রফতানিকারকের সাথে ২০ লাখ বা তার বেশি পরিমাণ ঘোষণাকৃত মূল্যের পণ্য ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করেছে। সে সকল আমদানিকারক ও রফতানিকারকের নামসহ বিলঅবএন্ট্রি এবং সিএন্ডএফ কমিশন সম্বলিত নীতিমালা পর্যালোচনা করা আবশ্যক।
আরও পড়ুন: বিটিভির দুর্নীতির রাণী মাহফুজা আক্তার
দুদকের মাদারীপুর কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনারকে তথ্যাদী পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকা কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, সিএন্ডএফ রাহাত মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানিকৃত ও রফতানিকৃত পণ্য খালাসে নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে নানা অনিয়মের অভিযোগে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির মামলাও করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: মিথ্যা ঘোষণায় কুরিয়ার দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে নভোএয়ারের ৩০ পণ্যের চালান
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তা বাংলাবার্তাকে বলেন, অভিযোগটি আমলে নিয়ে কমিশন অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে রাহাত মাহমুদকে কমিশনে ডেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে জানা যাবে প্রকৃত তথ্য।
এ বিষয়ে মেসার্স দি নিজামপুর এজেন্সির অংশীদার মালিক রাহাত মাহমুদ বাংলাবার্তাকে বলেন, আমি ঢাকা কাস্টম হাউসে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সিএন্ডএফ ব্যবসা করে আসছি। আমার কোনো দুর্নাম নেই। আমি প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসার শিকার। ভিলেজ রাজনীতির শিকার। আমার কাছে দুদক থেকে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে আমি সেগুলো দিয়েছি।
আপনি সামান্য বেতনে চাকরি করে কিভাবে শত শত কোটি টাকার মালিক হলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইনটি কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেননি।
বাংলাবার্তা/এসজে