ছবি : সংগৃহীত
সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও গাজী গোলাম দস্তগীরের ছেলেরা যমুনা ব্যাংক থেকে আইটি সামগ্রী সরবরাহের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, তাজুল ইসলামের ছেলে ও ব্যাংক চেয়ারম্যান মো: সাইদুল ইসলাম ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বোর্ড মিটিংয়ে ১৫ কোটি টাকা মূল্যের হার্ডওয়ার সামগ্রী ৮০-৯০ কোটি টাকা জোরপূর্বক চেয়ারম্যান হিসাবে প্রভাব খাটিয়ে আইটি'র হার্ডওয়্যার ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয় দেখিয়ে এই টাকা আত্মসাৎ করেন। আর তার এই কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেছে সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর ও তার ছেলে মর্তুজা এবং সেই সাথে ছিল পরিচালক রেদোয়ান করিম আনসারী, পরিচালক রবিন রাজন সাখাওয়াত আইটি হেড জাহিদ।
এছাড়া ব্যাংকের বিভিন্ন খাতে শত কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করে ব্যাংক চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বিদেশে পলাতক রয়েছে। তিনি তার পিতার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকের টাকা লুটপাট ঘটনায় ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা ইলিয়াছ কাছে এই বিষয়ে প্রতিবেদন চাইলে ব্যাংক থেকে কোনো প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি।অভিযোগ রয়েছে পরিচালক উত্তম কুমার মন্ডল স্বাক্ষরিত চিঠির উত্তর না দিয়ে বরং সাবেক এই ২ মন্ত্রীর প্রভাবে দুদকের এই পদক্ষেপকে বন্ধ করে দেয়া হয়।
আইটি সামগ্রী ক্রয়ের অভিযোগের ব্যাপারে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ন পরিচালক স্বাক্ষরিত চিঠি দুর্নীতি দমন কমিশনে গেলে পুনরায় এটি আলোচনায় আসে। এই চিঠির প্রেক্ষিতে চলতি মাসের ৫ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালককে (মানি লন্ডারিং) কমিশনের ব্যাংক শাখা হতে অনুসন্ধানের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এই সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে যমুনা ব্যাংকের এমডি মির্জা ইলিয়াছকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তী সময়ে অনিয়মের বিষয়ে উল্লেখ করে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলেও কোনো সাড়া দেননি।
দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, যমুনা ব্যাংকের কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে। সুতরাং দুর্নীতি হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বাংলাবার্তাকে বলেন, দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে দুর্নীতি বিকাশের সুযোগ করে দিয়েছে দুদক। এর ফলে দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের দুর্নীতির তথ্য সামনে আসছে। কিন্তু আগে থেকে যদি এগুলো আসতো তাহলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতো। কিভাবে দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য তিনি চেষ্টা করবেন। একই সাথে দুদককে স্বাধীন এবং সব ধরনের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে কাজ করবেন তিনি বলেও জানান।
বাংলাবার্তা/এআর