ছবি: বাংলাবার্তা
ঢাকায় নম্বর প্লেটবিহীন একটি নিশান জিটিআর স্পোর্টস কার জব্দ করা হয়েছে। এটির দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় কয়েক কোটি টাকা হলেও ‘প্রথম ক্রেতা’ কিনেছেন একেবারেই ‘হাস্যকর’ দামে। মাত্র ৬০ হাজার টাকায়। এই দামে বিক্রি করেছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। অবশ্য এই ক্রয়-বিক্রয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে নিলামের মাধ্যমে হয়েছে।
বিষয়টি পুরোপুরি খোলাসা করার জন্য কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রেখেছে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) গাড়িটি রাজধানীর ভাটারা থেকে জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। তবে তারা আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানিয়েছে।
শুল্ক ও গোয়েন্দা তদন্ত অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ‘গোপন খবরে অধিদফতর জানতে পারে- সেদান কার এর একটি চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর ব্যবহার করে একটি স্পোর্টস কার সংযোজন করা হচ্ছে। এ খবরে অধিদফতরের একটি টিম বারিধারার কন্টিনেন্টাল ওয়ার্কসে অভিযান চালায়। এসময় নিশান জিটিআর নামীয় গাড়িটি (স্পোর্টস কার) নম্বর প্লেটবিহীন অবস্থায় জব্দ করা হয়। যার চেসিস নম্বর- JNICCUA33Z0-170480.
সূত্র আরও জানায়, ‘পরবর্তীতে মারজান অটো নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাস্টমস গোয়েন্দা টিমের কাছে কিছু দলিল উপস্থাপন করেন। তাতে দেখা যায়, কৌশিক আহমেদ নামে এক ব্যক্তি নিলামের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে গাড়িটি চীনা অ্যাম্বাসি থেকে ৬০ হাজার টাকায় কিনেন। মারজান অটো কর্তৃপক্ষ কৌশিকের কাছ থেকে গাড়িটি কিনেছেন।’
‘গাড়িটি দুই দরজা বিশিষ্ট নিশান স্পোর্টস কার। দূতাবাস হতে নিলামে কেনা ক্যাফরিও এর চেসিস নম্বর: JNICCUA33Z0-170480 অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।’
সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রতিটি গাড়ির চেসিস নম্বর স্বতন্ত্র হয়ে থাকে। এছাড়া0 দাখিলকৃত দলিলে কিছু অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়। গাড়িটি আমদানির সময় ২০০২ সাল হলেও (বিল অব এন্ট্রি সি-০৫৩৮৩, ১ আগস্ট ২০২২) এর উৎপাদন সাল ২০০৮ উল্লেখ রয়েছে; যা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাছাড়া, একই গাড়ি আবার ফ্রান্স দূতাবাসের বিপরীতে ট্যাক্স এক্সেমশন সনদ দেওয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। এ বিষয়ে একটি চিঠির কপিও দাখিল করেছে মারজান অটো। অর্থাৎ মারজান অটোর দাখিলকৃত তথ্যগুলো সাংঘর্ষিক এবং অনিয়মের বিষয়টি এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
আরও জানা গেছে, ‘মারজান অটোর পক্ষে থেকে বিআরটিএ এর কাছে রেজিস্ট্রেশনের আবেদনপত্রে গাড়িটির ব্র্যান্ড নিশান সেফিরো দিয়ে আবেদন করলেও বিআরটিএ হতে গাড়িটিকে কীভাবে স্পোর্টস কার হিসাবে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে তা বোধগম্য নয়। এসব ঘটনায় প্রাথমিকভাবে এটা নিশ্চিত যে, চীনা দূতাবাসের কাছ থেকে নিশান ক্যাফরিও গাড়িটি নিলামে কেনা হলেও পরে মিথ্যা ঘোষণায় বা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে স্পোর্টস কার গাড়িটি এনে বা সংযোজন করে তাতে অবৈধভাবে ক্যাফরিও গাড়ির চেসিস নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। এতে নিশ্চিতভাবে শুল্ক কর ফাঁকি হয়েছে।’
বাংলাবার্তা/এসজে/এমআর